রাজশাহীতে সড়ক দুর্ঘটনা: নিহত ১৭ জন

ঢাকা: রাজশাহীতে বাস, মাইক্রোবাস ও লেগুনার ত্রিমুখি সংঘর্ষে কমপক্ষে ১৭ জন নিহত হয়েছেন। শুক্রবার (২৬ মার্চ) দুপুরে নগরীর কাটাখালী থানার মোড়ে এ দুর্ঘটনা ঘটে।

রাজশাহী মেট্রোপলিটন পুলিশের অতিরক্তি উপকমিশনার গোলাম রহুল কুদ্দুস জানান, দুপুরে কাটাখালীর থানারা মোড়ে হানিফ পরিবহনের একটি বাসের সঙ্গে একটি মাইক্রোবাস ও লেগুনার সংঘর্ষ হয়। এ সময় মাইক্রোবাসের গ্যাস সিলিন্ডার বিস্ফোরিত হয়ে আগুন ধরে যায়। এতে ঘটনাস্থলে ১১ জন মারা যান। হাসপাতালে নেওয়ার পর আরও ছয় মারা যান।

তিনি আরও জানান, প্রাথমিকভাবে নিহতদের পরিচয় জানা যায়নি। মৃতের সংখ্যা আরও বাড়তে পারে বলে ধারণা করা হচ্ছে। দুর্ঘটনার পর মাইক্রোবাসটি আগুনে পুড়ে গেছে। আহত দুইজনকে হাসপাতালে ভর্তি করা হয়েছে

এদিকে রাজশাহির কাটাখালি কাপাশিয়া এলাকায় যাত্রীবাহি বাসের সঙ্গে মাইক্রোবাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে নিহত ১৭ জন রংপুরের পীরগঞ্জের বাসিন্দা।

শুক্রবার (২৬ মার্চ) সন্ধ্যায় ১৭ জনের মৃত্যুর বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেস চন্দ্র।

নিহত ১৭ জনের মধ্যে ১৬ জনই ৪টি পরিবারের সদস্য। শুক্রবার সকালে নিহতরা পীরগঞ্জ উপজেলা সদর থেকে মাইক্রোবাসে করে রাজশাহীতে পিকনিকে যাচ্ছিলেন।

এদিকে নিহতের খবর ছড়িয়ে পড়লে পুরো পীরগঞ্জ উপজেলাজুড়ে শোকের ছায়া নেমে এসেছে। স্বজনদের আহাজারিতে সেখানকার বাতাস ভারী হয়ে উঠেছে।

এদের মধ্যে নিহত হন ১ নম্বর চৈত্রকোল ইউনিয়নের রাঙ্গামাটি গ্রামের একই পরিবারের পাঁচজন এবং ১৩ নম্বর রামনাথপুর ইউনিয়নের বড় মহাজিদপুর গ্রামের একই পরিবারের পাঁচজনসহ ছয়জন, ৮ নম্বর রায়পুর ইউনিয়নের দ্বাড়িকাপাড়া গ্রামের একই পরিবারের তিনজন ও পৌর এলাকার প্রজাপাড়ার একই পরিবারের তিনজন নিহত হয়েছেন।

নিহতরা হলেন, পীরগঞ্জ উপজেলার দারিকা পাড়া গ্রামের মোখলেছার রহমান, তার স্ত্রী পারভীন বেগম ও ছেলে পাভেল।

প্রজাপাড়া গ্রামের তাজুল ইসলাম ভূট্টু, তার স্ত্রী মুক্তা বেগম ও ছেলে ইয়ামিন। বড় মজিদপুর গ্রামের ফুল মিয়া, তার স্ত্রী নাজমা বেগম, দুই মেয়ে সুমাইয়া (৭) ও সাজিদ (৩)।

রাজারামপুর গ্রামের সালাহ উদ্দিন, তার স্ত্রী শামসুন্নাহার বেগম, ছেলে সজিব, মেয়ে সাবা ও শ্যালিকা কামরুন্নাহার বেগম । দরাকুঠি গ্রামের শহিদুল ইসলাম এবং মাইক্রোবাসের ড্রাইভার পচা চন্দ্র।

এলাকাবাসি ও পুলিশ জানায়, কয়েকদিন আগে পীরগঞ্জের ব্যবসায়ী রফিকুল ইসলাম ১৪সিটের একটি মাইক্রোবাস কিনে আনেন। শুক্রবার সকালে ৪টি পরিবারের সদস্যসহ ১৭ জন ওই মাইক্রোবাস ভাড়া করে রাজশাহীর পদ্মার পাড়ে পিকনিক করতে যাচ্ছিলেন। কাটাখালি কাপাশিয়া এলাকায় পৌঁছার পর বিপরীত দিক থেকে আসা একটি যাত্রীবাহী বাসের মুখোমুখি সংঘর্ষে মাইক্রেবাসটি দুমড়ে মুচড়ে আগুন ধরে যায়। এতে ১৭ জনই নিহত হন।

এদিকে পীরগঞ্জ থানার ওসি সরেস চন্দ্র জানান, রাজশাহী থেকে তাকে ম্যাসেজের মাধ্যমে দুর্ঘটনার খবরটি জানানো হয়। নিহতদের স্বজনরা দুটি গাড়িতে করে ঘটনাস্থলে গেছে। তারা নিহত ১৭ জনের মরদেহ নিয়ে রাতের মধ্যে ফেরার কথা রয়েছে।

Leave a Reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *